শ্রীশ্রীগুরু-গৌরাঙ্গৌ জয়তঃ
হে শ্রীনিত্যানন্দরাম!
কুরুক্ষেত্রে শ্রীজগন্নাথ মন্দিরে:
শ্রীমতীগান্ধর্ব্বিকার কোনও এক সাধিকা আপনার সহচরী-সমভিব্যহরে, সুদূরনিষ্ঠ-প্রবাসান্তে-সমৃদ্ধিমান-মিলন-লীলাক্ষেত্র-কুরুক্ষেত্র হইতে শ্রীপুরীধামে পৌর্ণমাসী-কর্তৃক আনিতা হইলেন। শ্রীজগন্নাথ মন্দিরে সপার্ষদ নৃত্য-সঙ্কীর্ত্তনকারী শ্রীশচীনন্দন গৌরহরি কে বিপ্রলম্ভভাবময় রূপে দর্শনে আশ্চর্য্যান্বিতা হইলেন।
মুরারির ভাব-বর্ণ বৈপরীত্যে পরিপূর্ণ
প্রিয়া-ভাবে সাজিল সন্ন্যাসী।
পাশে কেবা অবধূত! নাচে অতি অদভূত
শরচ্চন্দ্র-রোশনায় ভাসি॥
ছন্নাবতারী গৌররূপধারী কৃষ্ণ, মাধুর্য্যবিগ্রহ শ্রীনন্দনন্দনের ঔদার্য্যময় লীলা, সম্ভোগময়-বিগ্রহ অপ্রাকৃত কামদেবের সন্ন্যাসীরূপ এবং তৎসহজাত-বিপ্রলম্ভভাব দেখিয়া বিস্ময়ান্বিত হই’ আপনা সহচরীকে সেই গৌররূপধারীর পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলে, তিনি তাঁহাকে মুরারির মাথুর-বিরহ-কাতরা গান্ধর্ব্বিকার ভাব-কান্তি গ্রহণের বৃত্তান্ত সম্বন্ধে অবহিত করাইলেন।
অপরদিকে, সেই নৃত্যরত স্বর্ণময় গৌর-বিগ্রহের পার্শ্বে অপূর্ব্ব শরচ্চন্দ্র-প্রভা-বিস্তারকারী অবধূত-রূপী আর এক মহাপ্রেমময়মূর্ত্তি কে দেখিয়া ভাবান্বিতা হইলেন।
কৃষ্ণপ্রেম-মদিরায় চৌদিকে মাতায়ে ধায়
সবে পিলায় কণ্ঠ ভরিয়া।
রোহিণীসুত বলাই গোপবেশ ত্যজে নাই
এবে সবে লইল চিনিয়া॥
কৃষ্ণের ভাব ও বর্ণ পরিবর্ত্তনে গৌররূপ গোপ্য তথা গৌরলীলাভিনয়-উদ্দেশ্যে সুচারু-রূপে প্রকাশিত হইলেও, আপামরে গৌরপ্রেম-প্রদানকারী শরচ্চন্দ্রকান্তিময় বলরামের রূপ-বর্ণ-ভাব তথা আচরণ লক্ষ্য করিয়া অতি সহজেই কিন্তু সেই অবধূত-বেশধারী শ্রীনিত্যানন্দের পরিচয়-নিরূপণ করিয়া লইলেন।
শ্রীমন্নিত্যানন্দ বলরাম
অবধূত পরিচয়ে না পড়িহ সংশয়ে
'মদ-আন' কহে নিতি নিতি।
মত্ত হস্তী, প্রেমানন্দে দেখ দাউ নিত্যানন্দে
বসুধা-জাহ্নবা নিত্যপতি॥
পরন্তু, গোপরাজ-শ্রীনন্দ-পরিবারের স্বতঃস্ফূর্ত্ত ও স্বভাবজঃ প্রেম-মদমত্ত বলাই-এর এই ব্যবহার-বিপরীত অবধূত আশ্রম-গ্রহণের কারণ ও রক্ষণ লইয়া কিয়ৎপরিমাণে সন্দিগ্ধা হইলে, পার্শ্বস্থিতা সহচরী সেই আরাধিকা-সাধিকার অভিজ্ঞান দৃঢ়ীকরণ করিয়া কহিলেন - হে সখি, দেখিতেছ না, দাউজী অবধূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হইয়াও আত্মগোপন করিতে না পারিয়া প্রেমময় নন্দব্রজস্থিত তাঁহার স্বভাবসিদ্ধ নিত্য-গোপভাব প্রকাশ করিয়া পুষ্প-মধুপানের জন্য লালায়িত হইয়া কৃষ্ণপ্রেমারূপা সেই উত্তপ্ত-ঘন বস্তু আনাইতে তাঁহার পার্ষদ গোপবালকদিগকে বারংবার আদেশ করিতেছেন?
পুনরপি - ওহে সখি, যদি নিতান্তই অবধূত-পরিচয়-সম্বন্ধে এযাবৎ তোমার হৃদয়ের সন্দেহ দূরীভূত না হইয়া থাকে, তাহা হইলে ঐ দেখ, অতীব স্নেহবর্ষণকারী আমাদিগের বরজ-জ্যেষ্ঠা রেবতী ও বারুণীকে দাউ তাঁহার পত্নীত্বে গ্রহণ করিয়াছেন!
"তদীয়ৈক-প্রাণপ্রতিম-বসুধা-জাহ্নবী-পতিং" - শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর মহাশয়
"জয়তি জয়, বসু-জাহ্নবা-প্রিয়, দেহি মে স্বপদান্তিকম্" - শ্রীল কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীপাদ
এই বুঝি হল ধরি কর্ষিয়া কৌরবপুরী
ভাসাইবে যমুনার জলে।
অথবা - সে প্রেমভরি অপরাধ ক্ষমা করি
মাধাইরে তুলি লয় গলে॥
ওহো! যে পরমপ্রতাপী রোহিণীনন্দন ক্রোধে হস্তিনাপুর আকর্ষণ করিয়া একদা যমুনায় ভাসাইতে উদ্যত হইয়াছিলেন, সেই দাউজী তাঁহার ঔদার্য্যঘনমূর্তি শ্রীনিত্যানন্দের শ্রীঅঙ্গে অভিঘাতকারী মাধাই কে ক্ষমা-পূর্ব্বক কোল দান করিয়াছেন!
নমি' একচাকা গিয়া কহি - আঁশু মুছাইয়া
আর কান্না না করহ আই।
গৌরপ্রেম বরিষণে ডুবাইয়া জগজনে
উদ্ধারিল তোমার নিতাই॥
পরমকরুণাময়ী রোহিণী মাতার কথা স্মরণ করিয়া, সেই ব্রজদেবী-ভাবময়ীর স্বগতোক্তি - যাই, আমি একচক্রা গ্রামে গিয়া পদ্মাবতী আই’র শ্রীচরণধূলি মস্তকে ভূষিত করিয়া বলিয়া আসি - ওগো মাতে, আর তোমার নিতাইয়ের বিরহে ক্রন্দন করিয়ো না। ধরাধামে গৌরপ্রেম-বর্ষণকারী তোমার নন্দন - সমগ্র জগদ্বাসী কে উদ্ধার করিতেছেন।
শ্রীমন্নিত্যানন্দ প্রভুর আবির্ভাব মন্দির - সূতিকা-গৃহ, শ্রীধাম একচক্রা
বেদগুহ্য অবধূত লীলা - দণ্ড-ধারণ ও মুনিধর্ম্ম-ত্যাগ:
শ্রীকৃষ্ণের দ্বিতীয় বিগ্রহ, বৈভব-প্রকাশমূর্ত্তি মূল-সঙ্কর্ষণ, রেবতী-বারুণীর উপপতি বলরাম শ্রীনবদ্বীপলীলায় অবধূতবেশ প্রকাশ করিয়াছিলেন। পুনশ্চ, শ্রীগৌররূপী লীলাময় স্বরাট্পুরুষ শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছায় শ্রীমন্নিত্যানন্দপ্রভু তাঁহার সেই বর্ণময় বলরাম-ভাব আচ্ছাদিত রাখিবার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। শ্রীচৈতন্যলীলার ব্যাস শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠক্কুর-কৃত শ্রীচৈতন্যভাগবতে অন্ত্যখণ্ডে সপ্তম অধ্যায়ে মূল গুরুমূর্ত্তি শ্রীনিত্যানন্দরাম শ্রীগৌরসুন্দর কে বলিলেন -
"আপনেই মোরে তুমি দণ্ড ধরাইলা।
আপনেই ঘুচাইয়া এরূপ করিলা॥
তাড়, খাড়ু, বেত্র, বংশী, শিঙ্গা, ছান্দ-দড়ি।
ইহা ধরিলাঙ আমি মুনিধর্ম্ম ছাড়ি'॥"
ব্যবহারিক জন এই নিত্যানন্দ-ব্যবহার দেখিয়া হাস্য-অপরাধ করিয়া থাকেন -
"মুনিধর্ম্ম ছাড়াইয়া যে কৈলে আমারে।
ব্যবহারি-জনে সে সকলে হাস্য করে॥"
বলরাম ভাব-কান্তি, গোপবেশ:
শ্রীমন্মহাপ্রভু শ্রীগৌরসুন্দর শ্রীনিত্যানন্দ বলরাম কে উত্তরে কহিলেন -
"বেত্র, বংশী, শিঙ্গা, গুঞ্জাহার, মাল্য, গন্ধ।
সর্ব্বকাল এইরূপ তোমার শ্রীঅঙ্গ॥
যতেক বালক দেখি তোমার সংহতি।
শ্রীদাম-সুদাম-প্রায় লয় মোর মতি॥
বৃন্দাবন-ক্রীড়ার যতেক শিশুগণ।
সকল তোমার সঙ্গে লয় মোর মন॥
সেই ভাব, সেই কান্তি, সেই সব শক্তি।
সর্ব্ব দেহে দেখি সেই নন্দ-গোষ্ঠি-ভক্তি॥"
শ্রীগৌরসুন্দরের শ্রীমুখে শ্রীনিত্যানন্দ-মহিমা বর্ণন:
শ্রীচৈতন্যভাগবতে অন্ত্যখণ্ডে দ্বিতীয় অধ্যায়ে, স্বয়ং শ্রীগৌরসুন্দর তাঁহার অভিন্ন নিত্যানন্দ স্বরূপ সম্বন্ধে সাবধান করিয়া বলিলেন -
"মোর দেহ হৈতে নিত্যানন্দ-দেহ বড়।
সত্যসত্য সবারে কহিনু এই দঢ়॥
নিত্যানন্দ-স্থানে যার হয় অপরাধ।
মোর দোষ নাহি তার প্রেমভক্তিবাধ॥
নিত্যানন্দে যাহার তিলেক দ্বেষ রহে।
ভক্ত হইলেও সে আমার প্রিয় নহে॥"
শ্রীচৈতন্যভাগবতে অন্ত্যখণ্ডে ষষ্ঠ অধ্যায়ে, শ্রীমন্মহাপ্রভুর সহাধ্যায়ী ও প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধাযুক্ত জনৈক বিপ্রের অক্ষজ নেত্রে শ্রীনিত্যানন্দের বিলাস-আচরণ দর্শনে সন্দিগ্ধ-হৃদয় ও তৎসম্বন্ধে প্রশ্নকারী বিপ্রের প্রতি শ্রীগৌরসুন্দরের উক্তি -
"শুন বিপ্র, মহা-অধিকারী যেবা হয়।
তবে তান্ দোষ-গুণ কিছু না জন্ময়॥
...
পদ্মপত্রে যেন কভু নাহি লাগে জল।
এইমত নিত্যানন্দস্বরূপ নির্ম্মল॥
...
রুদ্র বিনে অন্যে যদি করে বিষ-পান।
সর্ব্বথায় মরে, সর্ব্বপুরাণ প্রমাণ॥
...
গর্হিতো করয়ে যদি মহা-অধিকারী।
নিন্দার কি দায়, তাঁরে হাসিলেই মরি।"
ব্রহ্মানন্দন প্রজাপতি মরীচির ছয়পুত্রের শ্রীমদ্ভাগবতোক্ত আখ্যান ব্যাখ্যা করিয়া শ্রীমন্মহাপ্রভু পরিশেষে বলিলেন -
"কহিলাঙ এই বিপ্র, ভাগবত-কথা।
নিত্যানন্দ-প্রতি দ্বিধা ছাড়হ সর্ব্বথা॥
নিত্যানন্দস্বরূপ - পরম অধিকারী।
অল্প ভাগ্যে তাহানে জানিতে নাহি পারি॥
...
তাঁহার আচার - বিধি-নিষেধের পার।
তাঁহারে জানিতে শক্তি আছয়ে কাহার॥
না বুঝিয়া নিন্দে' তাঁ'র চরিত্র অগাধ।
পাইয়াও বিষ্ণুভক্তি হয় তা'র বাধ॥
...
পাছে তাঁ'রে কেহ কোনরূপে নিন্দা করে।
তবে আর রক্ষা তা'র নাহি যম-ঘরে॥
যে তাঁহারে প্রীতি করে, সে করে আমারে।
সত্য সত্য সত্য বিপ্র, কহিল তোমারে॥"
শ্রীনিতাই-গৌরাঙ্গ - শ্রীএকচক্রাধাম
শ্রীগৌরসুন্দরের শ্রীমুখে চরম সাবধান বাণী:
শ্রীমন্মহাপ্রভুর চরম সাবধানী বাণী তথা শ্রীমুখকৃত শিক্ষাশ্লোকঃ -
"মদিরা যবনী যদি নিত্যানন্দ ধরে।
তথাপি ব্রহ্মার বন্দ্য কহিল তোমারে॥
গৃহ্নীয়াদ্ যবনীপাণিং বিশেদ্ বা শৌণ্ডিকালয়ম্।
তথাপি ব্রহ্মণো বন্দ্যং নিত্যানন্দপদাম্বুজম্॥"
শ্রীনিত্যানন্দ-নিন্দাকারীর গতি:
শ্রীচৈতন্যভাগবতকার শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর মহাশয় মধ্যখণ্ডে ষষ্ঠ, বিংশ ও একাদশ অধ্যায়ে লিখিলেন -
গ্রন্থ পড়ি' মুণ্ড মুড়ি' কারো বুদ্ধি নাশ।
নিত্যানন্দ-নিন্দা করে যাইবেক নাশ॥
...
ভাগবত পড়িয়াও কারো বুদ্ধি নাশ।
নিত্যানন্দ-নিন্দা করে হইবে সর্ব্বনাশ॥
...
এইমত নিত্যানন্দ-চরিত্র অগাধ।
সুকৃতির ভাল, দুষ্কৃতির কার্য্যবাধ॥
নিত্যানন্দ-নিন্দা করে যে পাপিষ্ঠ জন।
গঙ্গাও তাহারে দেখি করে পলায়ন॥
শ্রীব্যাসাভিন্ন শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর মহাশয়
ব্যাসাভিন্ন শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর মহাশয়ের কৃপা:
পতিতপাবনী শ্রীমতী গঙ্গাদেবী শ্রীনিতাই-চরণে অপরাধকারীকে দেখিয়া পলায়ন করিলেও, অবধূত-শিরোমণি শ্রীনিত্যানন্দচন্দ্রের বিশেষ কৃপাপাত্র শ্রীব্যাসাবতার শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর মহাশয় অপরাধীগণের উদ্দেশ্যে কৃপা-পুর্ব্বক বলিলেন -
"এত পরিহারেও যে পাপী নিন্দা করে।
তবে লাথি মারোঁ তা'র শিরের উপরে॥"
শ্রীচৈতন্যভাগবত মধ্য/৬/১৩৭
শক্তিসহ-পরিণয় ও শক্তি-মহিমা:
নিত্যসিদ্ধ পার্ষদ শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর মহাশয় “শ্রীশ্রীজাহ্নবাদেবী”-শীর্ষক নিবন্ধে লিখিয়াছেন - “আনুমানিক ১৪০৯/১০ শকে জাহ্নবাদেবী অম্বিকা কাল্নাস্থ মহাপ্রভুর প্রিয়পাত্র শ্রীসূর্য্যদাস পণ্ডিতের সৌভাগ্যশালিনী ভদ্রাবতী নাম্নী পত্নীর গর্ভ হইতে আবির্ভূতা হয়েন। উপযুক্ত সময়ে শ্রীশ্রীনিত্যানন্দ-প্রভু সর্ব্বগুণসম্পন্না জাহ্নবার ও তদীয়া জ্যেষ্ঠা সহোদরা শ্রীমতী বসুধাদেবীর যথাবিধি পাণিগ্রহণ করেন। *** প্রভু-নিত্যানন্দ-শক্তি সাক্ষাৎ অনঙ্গমঞ্জরী জাহ্নবাদেবী যে-সকল অদ্ভুত কার্য্য করিয়াছেন, তাহা বৈষ্ণব-মণ্ডলীর প্রায় অবিদিত নাই।” - সজ্জনতোষণী ২/৪
ওঁবিষ্ণুপাদ সচ্চিদানন্দ শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর
শ্রীনিত্যানন্দ-নিন্দাকারীর সঙ্গ-বর্জ্জন:
শ্রীমন্নিত্যানন্দাভিন্ন জগদ্গুরু ভগবান শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর তাঁহার শ্রীগৌড়ীয়ভাষ্যে ব্যাখ্যা করিলেন -
“মূঢ় জনগণ আকর বিষ্ণুবস্তু শ্রীনিত্যানন্দকে বুঝিতে না পারিয়া তাহাদের ন্যায় কর্ম্মফলবাধ্য জীব-জ্ঞানে বিচার করিতে গিয়া নরকের পথে অগ্রসর হয়।… “ - শ্রীচৈতন্যভাগবত - অন্ত্য/৬/১১৮
প্রভুপাদ শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর
পুনরশ্চ - শ্রীচৈতন্যভাগবতে অন্ত্যখণ্ডে ষষ্ঠ অধ্যায়ে ১৪১তম শ্লোকের শ্রীগৌড়ীয়ভাষ্যে প্রভুপাদ শ্রীল সরস্বতী ঠাকুর লিখিলেন - “শ্রীগুরুতত্ব - নিত্যানন্দ, সেই কৃষ্ণাভিন্নবিগ্রহকে যে পাষণ্ডী বিদ্বেষবুদ্ধিতে গ্রহণ করে, সেই পাষণ্ডীর সঙ্গিগণের সহিত কোন প্রকার সম্বন্ধ রাখা ভগবদ্ভক্তের কর্ত্তব্য নহে।… ভক্তব্রুব ও ভক্ত - সম্পূর্ণ বিপরীত-ধর্ম্মবিশিষ্ট। তজ্জন্য অসৎসঙ্গিগণকে পরমার্থ সম্মিলনের সদস্য জ্ঞান করা - ভাগ্য-বিপর্য্যয়ের কথা।… তাহাদের গৌরসুন্দরের সেবা লাভ কখনও হয় না, তাহারা নিত্যকাল গুরুদ্রোহী হইয়া দুর্ভোগী হইয়া পড়ে।
অধুনাতন শ্রীগৌড়ীয়মঠের বিরোধী কৈতবপূর্ণ ভক্তব্রুবসম্প্রদায় যে পথে চলিতেছেন, তদ্দ্বারা তাহারা অমঙ্গল আবাহন করিবেন। তজ্জন্য ভক্তগণ তাহাদের ভাবী অমঙ্গল দেখিয়া নিতান্ত দুঃখিত।”
জয়োৎকর্ষ:
শ্রীব্যাসাবতার শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর ও পরম দয়াল সপার্ষদ শ্রীশ্রীগৌরনিত্যানন্দ জিউ জয়যুক্ত হৌন।
শ্রীমন্নিত্যানন্দাভিন্ন জগদ্গুরু সগণ প্রভুপাদ শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর জয়যুক্ত হৌন।