শ্রীশ্রীগুরু-গৌরাঙ্গৌ জয়তঃ
শ্রীভক্তিবিনোদ-বাণী-বৈভব হইতে উদ্ধৃত শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর মহাশয়ের উপদেশ -
প্রশ্ন - ‘বৈষ্ণবাপরাধ’ অপেক্ষা অধিক অপরাধ আছে কি?
উত্তর - “বৈষ্ণব-অবমাননা অপেক্ষা আর অধিক অপরাধ জীবের পক্ষে সম্ভব হয় না।”
– 'সমালোচনা', সজ্জনতোষণী ২।৬
প্রশ্ন - সাধুনিন্দা সর্ব্বাধম অপরাধ কেন?
উত্তর - “যে-সকল সাধু একমাত্র নামের আশ্রয় করিয়াছেন এবং সমস্ত কর্ম্ম, ধর্ম্ম, জ্ঞান ও যোগ পরিত্যাগ করিয়াছেন, তাঁহাদের নিন্দা করিলে বৃহদ্ অপরাধ হয়; কেন না, যাঁহারা নামের যথার্থ মাহাত্ম্য জগতে বিস্তার করিতেছেন, তাঁহাদের নিন্দা হরিনাম সহিতে পারেন না। নামপরায়ণ সাধুদিগের নিন্দা পরিত্যাগ-পূর্ব্বক তাঁহাদিগকেই ‘সর্ব্বোত্তম সাধু’ বলিয়া তাঁহাদের সঙ্গে নাম কীর্ত্তন করিলে নামের শীঘ্র কৃপা হয়।”
– জৈবধর্ম্ম ২৪শ অধ্যায়
প্রশ্ন - শুদ্ধবৈষ্ণব-নিন্দা কর্ণে আসিলে কি কর্ত্তব্য? বৈষ্ণব-নিন্দক গুরুব্রুবের প্রতি কিরূপ ব্যবহার করিতে হইবে?
উত্তর - “বৈধভক্তগণ ভগবন্নিন্দা ও ভাগবত-নিন্দার অনুমোদন বা সহায়তা করিবেন না। যদি কোন সভায় সেইরূপ নিন্দা হইতে থাকে, তবে যোগ্যতা থাকিলে তৎক্ষণাৎ তাহার প্রতিবাদ করিবেন। যেখানে প্রতিবাদের ফল না হইবে, সেখানে বধিরের ন্যায় থাকিবেন, তাহাতে কর্ণপাত করিবেন না। যোগ্যতা না থাকিলে, তৎক্ষণাৎ সে-স্থান পরিত্যাগ করিবেন। যদি গুরুদেবের মুখেও ঐরূপ নিন্দা শুনা যায়, তাঁহাকেও বিনীতভাবে তজ্জন্য সতর্ক করিবেন। যদি তিনি নিতান্ত-পক্ষে বৈষ্ণবদ্বেষী হন, তখন তাঁহাকে পরিত্যাগ-পূর্ব্বক অন্য উপযুক্ত পাত্রকে গুরুত্বে বরণ করিবেন।”
– শ্রীচৈতন্যশিক্ষামৃত ৩।৪
সচ্চিদানন্দ শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর মহাশয়
প্রশ্ন - বৈষ্ণবনিন্দা-শ্রবণে কি অসুবিধা হয়?
উত্তর - “সাধক কৃষ্ণনিন্দা ও বৈষ্ণবনিন্দা কর্ণে শুনিবেন না। যেখানে সেরূপ নিন্দা হয়, সেখান হইতে চলিয়া যাওয়া উচিত। যাহাদের হৃদয় দুর্ব্বল, তাহারা লোকাপেক্ষায় কৃষ্ণ-বৈষ্ণব-নিন্দা শুনিয়া ক্রমে ভক্তি হইতে চ্যুত হন।”
– 'তত্তৎকর্ম্মপ্রবর্ত্তন', সজ্জনতোষণী ১১।৬
প্রশ্ন - অপরাধের সর্ব্বাধিক গুরুত্ব কেন?
উত্তর - “বৈষ্ণব-জীবের অনাদর ও অসম্মান করিলে অপরাধ হয়। পাপসমূহ সামান্য প্রায়শ্চিত্তেই ক্ষয় প্রাপ্ত হয়; কিন্তু অপরাধ সহজে যায় না। পাপ - স্থূল ও লিঙ্গশরীরনিষ্ঠ। আর অপরাধ - জীবের আত্মনিষ্ঠ পতন-বিশেষ। অতএব যাঁহারা ভগবদ্ভজন করিবেন, তাঁহাদের পক্ষে অপরাধ হইতে বিশেষ আশঙ্কা থাকা আবশ্যক।”
– 'বৈষ্ণবনিন্দা', সজ্জনতোষণী ৫।২
প্রশ্ন - সাধুনিন্দার ফলে কি হয়?
উত্তর - “সিদ্ধান্ত করিয়া সাধু-বৈষ্ণবের সম্মান ও অসাধুর সঙ্গত্যাগ অবশ্য অবশ্য করিবেন। সাধু-বৈষ্ণবের নিন্দা করিলে হৃদয়ে কখনও নামতত্ত্বের উদয় হইবে না।”
– 'বৈষ্ণবনিন্দা', সজ্জনতোষণী ৫।৫
প্রশ্ন - অজ্ঞাতসারে অসৎসঙ্গ করা কি অপরাধ?
উত্তর - “আপনারা না জানিয়াও অসাধুসঙ্গ করিলে ভক্তির নিকট অপরাধী হইতেছেন।”
– 'বৈষ্ণবনিন্দা', সজ্জনতোষণী ৫।৫
প্রশ্ন - অপরাধ থাকিতে কি কৃষ্ণপ্রেম হয়?
উত্তর -
"বহু জন্ম কৃষ্ণ ভজি 'প্রেম' নাহি হয়।
অপরাধ-পুঞ্জ তার আছয়ে নিশ্চয় ॥
অপরাধশূণ্য হ'য়ে লয় কৃষ্ণ নাম।
তবে জীব কৃষ্ণপ্রেম লভে অবিরাম॥"
– শ্রীনবদ্বীপধাম-মাহাত্ম্য ১ম অধ্যায়
প্রশ্ন - ছয় প্রকার বৈষ্ণবাপরাধ কি কি ও তদনুষ্ঠাতার ফল কি?
উত্তর - “যে মূঢ় ব্যক্তি মহাত্মা বৈষ্ণবের নিন্দা করে, সে তাহার পিতৃলোকের সহিত মহারৌরব-নামক নরকে পতিত হয়। যে বৈষ্ণবকে হনন করে, নিন্দা করে, দ্বেষ করে, বৈষ্ণবকে দেখিয়া অভিনন্দন করে না, ক্রোধ করে বা বিমর্ষ হয়, তাহার পক্ষে এই ছয়টি আচার তাহার পতনের কারণ হয়।”
– 'বৈষ্ণবনিন্দা', সজ্জনতোষণী ৫।২
প্রশ্ন - অপরাধ কি কি ও তাহাদের লক্ষণ কি?
উত্তর - “অপরাধ বহুবিধ হইলেও প্রধানতঃ তিন ভাগে বিভক্ত হয় - বৈষ্ণবাপরাধ, সেবাপরাধ ও নামাপরাধ। বৈষ্ণবাপরাধ, যথা স্কান্দে, -
হন্তি নিন্দন্তি বৈ দ্বেষ্টি বৈষ্ণবান্ নাভিনন্দতি।
ক্রুধ্যতে যাতি নো হর্ষং দর্শনে পতনানি ষট্॥"
বৈষ্ণবের হনন করা, নিন্দা করা, দ্বেষ করা, অভিনন্দন না করা, বৈষ্ণবের প্রতি ক্রোধ প্রকাশ করা এবং বৈষ্ণব-দর্শনে হর্ষযুক্ত না হওয়া - এই ছয়টি অপরাধে জীবের মহাপতন হয়। কোন ভজন-প্রয়াসীর যেন এই অপরাধ না হয়। সেবা-অপরাধ শ্রীমূর্ত্তি-সেবা-সম্বন্ধেই বিচার্য্য। নামাপরাধ - দশবিধ।”
– 'বিশুদ্ধ ভজন', সজ্জনতোষণী ১১।৭
When Guru is a Vaiṣṇava-Offender
Question: What is more offensive than Vaiṣṇava offense?
Answer: For a living entity there is no graver offense committed against a Vaiṣṇava.
Question: Why is blaspheming of devotees the gravest of offenses?
Answer: It is great offense to blaspheme a devotee who has taken shelter of the Lord’s holy Name and given up the processes of karma, dharma, gyan, and yoga, because Sri Hari cannot tolerate blasphemy of those who are spreading the holy Name’s glory all over the world. If one gives up blaspheming devotees ehi are engaged in chanting the holy Name and instead chants the holy Name in their association, considering them the topmost devotees, then he will soon attain the holy Name’s mercy.
Question: What should one do if one happens to hear blasphemy of a pure Vaiṣṇava? How should one deal with a so-called guru who indulges in blasphemy of Vaiṣṇavas?
Answer: Devotees who are engaged in regulative devotional service should neither approve nor support the blasphemy of the Supreme Lord or His devotees. If such blasphemy is taking place in an assembly, if one is able to, he should immediately protest. If protest does not yeild any result, one should remain like a deaf man and do not pay heed to it. If one is unable to do even that, then he should immediately leave the place. If one hears blasphemy of Vaiṣṇavas even from his spiritual master’s mouth, then one should humbly caution him. If such a spiritual master remains envious of Vaiṣṇavas, one should renounce him and take initiation from a qualified spiritual master.
- Caitanya-Sikshamrta 3-4
Saccidānanda Śrīla Bhakti Vinode Ṭhākur Mahāśay
Question: What is the disadvantage of hearing blasphemy of Vaiṣṇavas?
Answer: A practitioner of devotional service should never hear blasphemy of Lord kṛṣṇa or of the Vaiṣṇavas. Wherever such speeches are taking place, he should leave the place. One who is weakhearted and thus hears blasphemy of kṛṣṇa and Vaiṣṇavas to please others, he gradually falls from the platform of devotional service.
- Sajjana Toṣaṇī 11/6
Question: What offense is the most grave?
Answer: If one disregards and disrespects Vaiṣṇavas, he commits an offense. Sinful reactions are nullified simply by undergoing ordinary atonement; but offenses are not nullified so easily. A sin is committed by both gross and subtle bodies; an offense degrades one’s self-realization. Therefore, those who desire to worship the Supreme Lord must be careful not to commit offenses.
- Sajjana Toṣaṇī 5/2
Question: What is the result of blaspheming Vaiṣṇavas?
Answer: One should resolve to respect Vaiṣṇavas and give up the association of non-vaiṣṇavas. The glories of the holy Name will never manifest in the hearts of those who blaspheme Vaiṣṇavas.
- Sajjana Toṣaṇī 5/5
Question: Is it an offense to unknowingly engage in bad association?
Answer: Even if you associate with nondevotees unknowingly, you commit an offense against devotional service.
- Sajjana Toṣaṇī 5/5
Question: Is it possible to attain kṛṣṇa-prema if one commits offenses?
Answer: One who does not attain love of God after worshiping Kṛṣṇa birth after birth, has certainly commited heaps of offenses, for only by chanting Kṛṣṇa’s name without offense can one attain kṛṣṇa-prema.
- Navadvīpa-dhāma-māhātmya, Chapter 1
Question: What are the six types of Vaiṣṇava aparādha and what are their results?
Answer: A foolish person who blasphemes a pure devotee, goes to hell along with his forefathers. Any person who kills a Vaiṣṇava, blasphemes a Vaiṣṇava, hates a Vaiṣṇava, who does not offer obeisances to a Vaiṣṇava when they meet, or who feels unhappy upon seeing a Vaiṣṇava certainly goes to a hell.
- Sajjan Toshani 5/2
Question: What are the different offenses and what are their symptoms?
Answer: Although offenses are of many kinds, they are mainly divided into three categories: vaiṣṇavaparādha, sevaparādha, and nāmāparādha. In the Skanda Purana the six Vaiṣṇavaparādhas are listed as follows: “To kill a Vaiṣṇava, to blaspheme a Vaiṣṇava, to hate a Vaiṣṇava, to fail to offer respect to a Vaiṣṇava, to display anger toward a Vaiṣṇava, and to not feel happy upon seeing a Vaiṣṇava.” By committing these offenses, one certainly falls down. No practitioner of devotional service should commit these offenses. The sevaparādhas are considered in regard to the deity worship. There are ten types of nāmāparādhas.
- Sajjan Toshani 11/7